আমাদের সময়
মাঝে মাঝে বড্ড ভোগে আমার আমি টা। কেমন যেন করে ওঠে ভেতরটা। জলের কোনো স্বাদ মেলে না, মিষ্টি কিছু ক্ষেতে ইচ্ছে করে না, মানুষ দেখলেই কেমন চিৎকারের মতো ঝাল লাগে।
ছাদের মধ্যে ভন্নি দুপুর বেলা গলোদ ঘম্য হতে, ইচ্ছে করে দাঁড়িয়ে থাকি। এমন সময় কত যে পাখি ওরে আকাশে, ওদের ও আমার মত খুব কষ্ট হয় মনে হয়। না হলে কে এই দুপুর বেলা এমন দিক- বিদিক শূন্যে ঘুরে বেড়াই বলো?
মাঝে মাঝে বুকের ভেতর টা কেমন যেনো ঠিকরে ওঠে। নিঃশ্বাস চেপে আসে, গা গুলিয়ে ওঠে, পা দুটো তুলতে পারি না, নিজের প্রতি নিজেকে কেমন যেনো নিঃস্ব লাগে। যেনো কোনো এক যানা সোনা সময় হঠাৎ করে অজানা হয়ে যাচ্ছে।
সন্ধ্যে হলে আবার বেশ লাগে, লাউড মুডে গান বাজিয়ে ছাদের কার্নিশের খুব কাছে দাঁড়িয়ে চাঁদের আলো গায়ে মাখি। স্নিগ্ধ আলো গায়ে মাখি আর গুন গুন করি। সেই সময় টা বেশ লাগে আমার। কাওকে প্রয়োজন হয় না, কাওকে দেখতে ইচ্ছে করে না । দাঁড়িয়ে শুধু চাঁদ আর এক আকাশ তারার মাঝে আমি একা, আর চারিদিকে ঝিঝির ডাক। বেশ লাগে আমার সময় টা।
আবার হঠাৎ হঠাৎ এমন হয়, যেমন একপশলা বর্ষা নামার আগে আকাশে সন্ধ্যে নামে, ঠিক তেমন। আমি তখন সামনের শ্বেত চন্দন গাছ টা কে জড়িয়ে ধরি। গাছ টা কেমন নাড়া দেয় আমাকে। যেন ওর ও কষ্ট হয় আমি কাঁদলে। তখন চোখ মুছে, তুলি ধরি। ভালোলাগে তখন আমার আঁকতে।
কিছু কিছু দিন এমন হয়, দুপুরের খিদে যেনো পরিমাণের থেকে খুব বেশি পায়। পেটের ভেতরটা কেমন যেনো গুর- গুর করে, আমি মা কে বলি, ""মা বড্ড খিদে পেয়েছে।।।"" মা খেতে দেয় খুব যত্ন করে। আর মায়ের হাতের রান্না, আঃ হা , অমৃত সমান। তবু যেনো আর খেতে পারি না। বুকে পেটে হঠাৎ ব্যাথা শুরু হয়, চোখে মুখে অন্ধকার নেমে আসে, গা গুলিয়ে বমি পর্যন্ত হয়ে যায়। খুব কষ্ট হয়। সোফায় চুপ করে মুখ গুঁজে পড়ে থাকি সারা দুপুর।
আজ কাল যেন কেমন ওই তৃতীয়ার চাঁদের মতো একা হয়ে যাচ্ছি। চাঁদ যেমন সকল কিছু দেখতে পায়, আর আমরা তাকে খুঁজলেও পায় না। ঠিক তেমন আমি সকল কে চায়, তবু সকলে আমাকে চায় না।
Comments
Post a Comment